‘কি বাহে একখান ভোট মুই পামু না, হামাক একখান ভোটার দিবান না, হামাক একখান ভোট দিবা।’- এভাবেই আঞ্চলিক ভাষায় পীরগঞ্জবাসীর কাছে ভোট চান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগঞ্জে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এভাবেই রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী।
উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দরকার বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, একমাত্র নৌকা মার্কা স্বাধীনতা দিয়েছে, অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছে। আমি আপনাদের এলাকার পুত্রবধূ। কী বাহে, একখান ভোট কি মুই পামু না? হামাক একখান ভোট দেবেন না? হামাক একখান ভোট দেবা?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে আমার মেয়ে শিরীন শারমিন চৌধুরীকে দিয়ে গেলাম। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করা মানে আমাকে ভোট দেওয়া, জয়কে ভোট দেওয়া, সে জয়ের বোন, পুতুলের বোন। এ সময় শিরীন শারমিন চৌধুরীর হাত তুলে উপস্থিত জনতাকে দেখান প্রধানমন্ত্রী।
পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌকাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। হাত তুলে দেখান। নৌকা জয়ী হলে আবারো রংপুরে আসব। এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে নৌকা প্রতীকে ভোট দেওয়ার ওয়াদা করেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ শুরু করি। আমাদের লক্ষ্য ছিল মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন। শিক্ষা, দীক্ষা ও কর্মসংস্থানে তরুণ যুবসমাজকে এগিয়ে আনতে কাজ করেছি। ভূমিহীন, গৃহহীনদের ঘর দিয়েছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। দেশ এখন ডিজিটাল হয়েছে। আমরা আনন্দিত যে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রংপুরে মঙ্গা দেখা দেয়নি।’
এসময় শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি এবং কৃষিতে অভাবনীয় উন্নয়নের বিবরণ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ইতিহাসে এই প্রথম গণতন্ত্র দীর্ঘদিন অব্যাহত থেকেছে। কিন্তু এটা অনেকেই চায় না। বিএনপি-জামায়াত আগুনসন্ত্রাস করে আনন্দ পায়। মানুষের জীবন নিয়ে খেলতে দেবো না। সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। তাদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।’
বিকেল ৩টা ৫৩ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেষ করেন ৪টা ২৫ মিনিটে। পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন রাজার সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ওই আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণায় রংপুর সফরে এসে দুপুর আড়াইটার দিকে পীরগঞ্জের ফতেহপুরে স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার বাড়ি ‘জয়সদনে’ পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে পৌঁছে ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত করেন এবং শ্বশুরবাড়ির স্বজনদের সঙ্গে কুশল বিনিয়োগ করেন। এরপর মধ্যাহ্নভোজ শেষে রংপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন। জনসভা শেষে সড়কপথে সৈয়দপুর গিয়ে বাংলাদেশ বিমানযোগে ঢাকায় ফেরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে, মিঠাপুকুর ও তারাগঞ্জে আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের জীবনমান উন্নত করেছে। আওয়াম লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। তাই নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আরেকবার আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।