প্রতি বছরের মতো এবারও আন্তর্জাতিক মাতৃভাসা দিবস ও ‘অমর একুশ’কে শ্রদ্ধার সঙ্গে পালন করা হয়েছে ভারতের কলকাতায়। কলকাতায় বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনের উদ্যোগে প্রভাতফেরির আয়োজন করা হয়। এদিন সকাল ৭ টা ৩২ মিনিট নাগাদ কলকাতার পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্ট থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একটি প্রভাতফেরি শুরু হয়। এতে অংশ নেন সাধারণ মানুষও।

ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে নিজেদের বক্তব্য পেশ করেন হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ অতিথিরা। কলকাতায় এই প্রথম ভাষা শহীদ দিবস উদযাপন করে অসামান্য অভিজ্ঞতা বলে জানালেন হাইকমিশনার অন্দালিব ইলিয়াস।

তিনি বলেন, নিজের ভাষার প্রতি ভালোবাসা থাকলে পৃথিবীতে আত্মসম্মানের সঙ্গে থাকা যায়। এবারে তাদের ভাষা দিবস উৎসবের থিম রয়েছে ৫২ অনুপ্রেরণায় ৭১-এর অর্জন।

তিনি আরও বলেন, ভাষার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে কোনো জাতি এগিয়ে যেতে পারে না।

কলকাতা প্রেসক্লাবের তরফ থেকেও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে শুধুমাত্র কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের তরফ থেকে নয়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও বেশ কয়েকটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

কলকাতার দেশ প্রিয় পার্কে মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। পরে শহীদ বেদিতে পুষ্পার্ঘ অর্পন করেন। এরপর ভাষা শহীদদের ফুলেল শ্রদ্ধা জানান নানা শ্রেণি পেশার মানুষ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে বাংলা ভাষা নিয়ে বিশেষ বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, সব ভাষার তার নিজস্বতা আছে। সবার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। আজ একটা প্রবণতা চলছে বাংলার সংস্কৃতিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করার। যে ভরসা যোগায়  বিশ্বাস যোগায়, সেই সংস্কৃতিকে লাঞ্ছনা করে কোনও কিছু একটা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।

ভাষা দিবস অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে।  বাংলাকে কলুষিত করার চেষ্টা চলছে। এই জিনিস আমরা বরদাস্ত করব না। বাংলার মাথানত হতে দেব না। বাংলার অধিকার কীভাবে রক্ষা করতে হয় তা আমরা জানি। একুশে ফেব্রুয়ারিকে আমরা ভুলছি না, ভুলবো না বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অন্যান্য বিধায়ক এবং বিশিষ্ট পদাধিকারী ব্যক্তিত্বরা। এছাড়াও ছিলেন খ্যাতনামা বহু বাংলা সঙ্গীতশিল্পী। বাংলা ভাষা নিয়ে বরাবরই আবেগপ্রবণ মুখ্যমন্ত্রী।