মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক।

আজ রোববার ভোর ৫টা ৫৬ মিনিটে জাতীয় স্মৃতিসৌধের বেদিতে প্রথমে রাষ্ট্রপতি এবং পরে প্রধানমন্ত্রী পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ভুটানের রাজাও।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। এ সময় বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয় এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল অভিবাদন জানায়।

পরে দলীয় প্রধান হিসেবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের সভাপতি শেখ হাসিনা। এসময় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ প্রথম সারির নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, ৩ বাহিনীর প্রধান ও ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিকরা এ সময় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত ছিলেন।

গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের শ্রদ্ধা জানানো শেষে সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় স্মৃতিসৌধ। সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যানার নিয়ে দলে দলে জনস্রোত প্রবেশ করে স্মৃতিসৌধে।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর বজ্রবাণীর পর বাঙালির মুক্তির আন্দোলনের শ্বাসরোধ করতে ২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চলাইটের নামে ঢাকাকে মৃত্যুপুরী বানিয়ে ফেলে পাকিস্তানি বাহিনী।

রাজারবাগ পুলিশ লাইনস, পিলখানা ইপিআরসহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিরোধ হলেও পাকিস্তানি সেনাদের ভারী অস্ত্রের সামনে তা টিকেনি বেশিক্ষণ। মেশিনগান, কামানের গোলার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু হয় শহরজুড়ে।

পৈশাচিক বর্বরতার মধ্যেই ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে আটক করে পাকিস্তানি বাহিনী। তার আগেই বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে তারবার্তা পাঠিয়ে যান তিনি, স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হয় ইপিআরের ওয়্যারলেস বার্তায়।

মরণপণ লড়াই চলে পরের নয়টি মাস। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত, অসংখ্য নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ধরা দেয় বিজয়। বাঙালির আত্মত্যাগ পরিণতি পায় বিশ্ব মানচিত্রে ‘বাংলাদেশ’ নামের এক নতুন রাষ্ট্রের অবয়বে।