ধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যুদ্ধ সংঘাত কখনোই শান্তি দিতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ সমাধান করতে হবে। ফিলিস্তিনে গণহত্যা ও বিশ্বজুড়ে সব যুদ্ধ বন্ধের আহবান জানান তিনি।
থাইল্যান্ডে জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের ৮০তম অধিবেশনে দেয়া বক্তব্যে এই আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা ফেরাতে এ অঞ্চলের দেশগুলোকে ভূমিকা রাখার আহবান জানান শেখ হাসিনা।
ছয়দিনের থাইল্যান্ড সফরের দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন- ইউএন এসক্যাপ এর ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সম্মেলনে দেয়া বক্তব্যে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাব মোকাবেলা, যুদ্ধ বিগ্রহ বন্ধ এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফিলিস্তিনে গণহত্যা চলছে। এতে আক্রান্ত হচ্ছে নারী ও শিশু। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) থাইল্যান্ডে ইউএনএসক্যাপ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি বিশ্বব্যাপী সব যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান।
যুদ্ধের ভয়াবহতা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরাইল-ইরান-প্যালেস্টাইনের যুদ্ধ বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। যুদ্ধের ভয়াবহতা আমি জানি। বাংলাদেশ কোনো যুদ্ধ চায় না। আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। যুদ্ধের কারণে যারা এখনও বিভিন্নভাবে কষ্ট পাচ্ছেন, তাদের দিকে দেখে বিশ্বনেতাদের যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগ নেয়া উচিত।
এ সময় রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা ও মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ন্ত্রণে আসিয়ানকে ভূমিকা রাখারও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছিল মানবিক প্রেক্ষাপট থেকে। কিন্তু তারাই বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৪ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে দেশটিতে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। থাইল্যান্ডে পৌঁছালে বিমানবন্দরে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেয়া হয়। থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত মন্ত্রী পুয়াংপেট চুনলাইদ তাকে অভ্যর্থনা জানান। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার এবং ১৯ রাউন্ড গান স্যালুট দেয়া হয়।
জানা গেছে, থাইল্যান্ডে পৌঁছানোর পর শেখ হাসিনা দেশটির প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন। সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দেন তিনি। এদিন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।