পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ আওয়ামী লীগের লোক নন বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তাদের অপরাধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার বিচার করার সাহস রাখে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

মঙ্গলবার (৪ঠা জুন) তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রতিনিধি সভায় যোগ দিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, কেউ দুর্নীতি করলে তাদের বিচার করার সৎ সাহস আছে সরকারের। আগামী বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দলের জাতীয় সম্মেলন করার কথাও জানান তিনি। এসময় দুর্নীতি নিয়ে বিএনপি’র নেতাদের বক্তব্য দেয়া মানায় না বলেও মন্তব্য করেন ওবাদুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, বেনজীর আমাদের দলের লোক নন। জ্যেষ্ঠতা ও মেধা নিয়ে তিনি আইজিপি হয়েছেন। আজিজও আমাদের দলের লোক নন। তিনি সেনাপ্রধান হয়েছেন তার যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতা দিয়ে। আমরা তাদের বানাইনি। এখন ভেতরে তারা যদি কোনো অপকর্ম করে, আর এটা যখন সরকারের কাছে আসে তখন এদের বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনা সরকারের আছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কাউকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব বা প্রশাসনের বড় পদে বসায়নি। বিএনপি আট জনকে পাশ কাটিয়ে নয় নম্বর ব্যক্তি মঈন ইউ আহমেদকে সেনাপ্রধান করেছে। বেগম খালেদা জিয়া এটা করেছেন। পুলিশের আশরাফুল হুদা, রকিবুল হুদা, এসপি কহিনুরের কথা মনে আছে? এরা কার সৃষ্টি?

তিনি বিএনপি ও দলটির নেতাকর্মীদের নিয়ে সমালোচনা করেন। বিএনপিকে দুর্নীতিবাজ বলে মন্তব্য করেন। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেককে নিয়েও সমালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে, বিদেশে সর্বত্রই একজন সৎ রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চা করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আওয়ামী লীগই একটি দল, যেটি জন্মলগ্ন থেকে দলের অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা করে। বিভিন্ন ইউনিট হচ্ছে আওয়ামী লীগের তৃণমূল। মহানগর হচ্ছে আওয়ামী লীগের ইঞ্জিন। তৃণমূল ঠিক না থাকলে ইঞ্জিন অচল হয়ে যায়। তৃণমূলই হচ্ছে আওয়ামী লীগের প্রাণ। এটাই হচ্ছে কর্মী সৃষ্টির কারখানা। নতুন সদস্য সংগ্রহের কারখানা।

দলের কিছু ভুল-ত্রুটি থাকে। আওয়ামী লীগ সেটি স্বীকার করে ও দলের এসব ভুল-ত্রুটি সংশোধনের সৎ সাহস রাখে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আগামী ৭ জুনের পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের এ জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, কর্মীরা কমিটির জন্য তৃষ্ণার্ত ছিল। এই চাতক অপেক্ষার অবসান হতে যাচ্ছে। ৭ জুন ঐতিহাসিক দিনটি পালনের পর আপনারা কমিটি পাবেন। জাতীয় সম্মেলনের আগে মেয়াদোত্তীর্ণ সব কমিটির সম্মেলন করে নতুন করে করবো; দলের প্রধান এই নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান কাদের।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি। এ সময় ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।