সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী এই উত্তরণের জন্য জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদানে সুইডেনকে অনুরোধ করেছেন।
জবাবে সুইডেনের দূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, তাদেরও এ ব্যাপারে আগ্রহ রয়েছে।
সুইডেনের সঙ্গে বাংলাদেশের বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে এবং এর বেশিরভাগই তৈরি পোশাকের (আরএমজি)। রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ এই খাতে (আরএমজি) সহযোগিতা প্রসারিত করবে এবং বিশেষ করে, তারা জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশে তাদের প্রতিশ্রুতির কারণে সামাজিক ও পরিবেশগত দিকগুলিকে টেকসই রাখাকে অগ্রাধিকার দিতে চায়।
প্রধানমন্ত্রীর ভিশন-২০৪১ সম্পর্কে আলেকজান্দ্রা বলেন, এই ডিজিটাল যাত্রায় সুইডেন বাংলাদেশকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
এ সময় শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য সুইডেনের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু উঠলে প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যা সেখানকার পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে।
রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩০ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের কারণে স্থানীয় বাংলাদেশিরা তাদের চাকরি হারাচ্ছে এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থানে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসহ ভালো ব্যবস্থা করায় ভাষানচরে রোহিঙ্গারা উন্নত জীবনযাপন করতে পারছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রোহিঙ্গা ও আশ্রয়দাতা সম্প্রদায় উভয়ের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি নিশ্চিত করতে তারা কক্সবাজারে আশ্রয়দাতা সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ প্রকল্প নিশ্চিত করেছেন।
প্রায় সাত বছর ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় প্রদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উদারতারও প্রশংসা করেন তিনি।
কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে বাংলাদেশে এসেছিলেন জানিয়ে আলেকজান্দ্রা বার্গ ভন লিন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বাংলাদেশ মহামারি মোকাবিলায় দুর্দান্ত ব্যবস্থাপনা দেখিয়েছে।
তিনি বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশি নারীরা অত্যন্ত প্রাণবন্ত ও শক্ত-সামর্থ্য।
রাষ্ট্রদূত বলেন, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের আগ্রহের খাত এবং তারা এসব খাতে আরও উন্নতি ও স্বচ্ছতা আনার উপায় খুঁজে বের করতে সহযোগিতা বাড়াতে চান।
তিনি বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সব ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
এ সময় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।