রাজধানীর গাবতলীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকাডুবির ঘটনায় আরও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো পাঁচ। কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মুনিব তকি সাংবাদিকদের খবরটি নিশ্চিত করেন।

নৌকার কয়েকজন যাত্রী এখনও নিখোঁজ। তাদের স্বজনরা তুরাগ নদীর পাড়ে উৎকণ্ঠায় সময় কাটাচ্ছেন। সাভার ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউজ ইন্সপেক্টর মাহফুজুর রহমান জানান, এখনও উদ্ধার অভিযান চলছে।

এর আগে দুই শিশু ও একজন নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। তারা হলো- শিউলি আক্তার (২৭), রূপন (৪) ও আরমান (৩)। লাশ উদ্ধার হওয়া আরও দুই শিশুর পরিচয় জানা যায়নি।

বাল্কহেডের ধাক্কায় তলিয়ে যাওয়া নৌকাটি শনিবার বিকাল ৩টার দিকে উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। ক্রেন দিয়ে এটি কয়লার ঘাটে নিয়ে আসা হয়। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া কর্মকর্তা মো. রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নৌ-পুলিশের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ এবং ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় নৌকাটি আমরা উদ্ধার করেছি। নৌকা থেকে কোনও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। প্রচণ্ড স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান কিছুটা বিঘ্নিত হয়।’

ডুবে যাওয়ার সময় নৌকার কয়েকজন যাত্রী সাঁতার দিয়ে তীরে আসতে পেরেছেন। তাদেরই একজন মনির হোসেন। তিনি জানান, নৌকায় ১৮ জন যাত্রী ছিল। তাদের মধ্যে তার পরিবারের সদস্য ৯ জন। তারা সাভার থেকে গাবতলীতে পার হচ্ছিলেন। ভোর ৫টার পর মাঝনদীতে বাল্কহেডের ধাক্কায় নৌকাটি তলিয়ে যায়। মনিরসহ চারজন সাঁতার দিয়ে পাড়ে উঠতে পারলেও তার পরিবারের পাঁচ সদস্য নিখোঁজ হয়।

মনির হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি, শফিকুল, সালমান ও তামিম সাঁতার দিয়ে তীরে উঠেছি। আমাদের পরিবারের সদস্য রিপন ও জেসমিনের খোঁজ পাচ্ছি না। আমরা চারজন গাবতলী বালুমহালে কাজ করতাম।’

বালুমহালের শ্রমিক মনির আরও বলেন, ‘ভোরে কিছুটা কুয়াশা ছিল। নৌকাচালকের দেখতে মনে হয় সমস্যা হচ্ছিল। বাল্কহেডটি সরাসরি নৌকার মাঝখানে ধাক্কা দেয়। এরপরই আমাদের ট্রলার উল্টে যায়।’

নৌ-পুলিশের জ্যেষ্ঠ পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় নৌ-পুলিশের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। মৃতদেহের ময়নাতদন্ত ও পরিচয় শনাক্তের পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।