নিরাপত্তার স্বার্থে কোটা সংস্কার প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক ডিবি হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (২৭ শে জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় দুর্বুত্তদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ স্থাপনা পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটি মহল সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এমন সব গুজব ছড়াচ্ছেন, যেগুলো শুনলে সাধারণ মানুষও ঠিক থাকতে পারেন না, বিভ্রান্ত হন। একদল গুজব ছড়িয়েছে, আরেকদল আক্রমণ করেছে। এই রকম সংঘবদ্ধ আক্রমণ শুধুমাত্র ডেডিকেটেড ফোর্সরাই করতে পারে। যেটা নাকি জামায়াত, বিএনপি এবং জঙ্গিদের কাছে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ধ্বংসলীলায় প্রমাণ হয়েছে ছাত্ররা ছাত্রদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তারা জামায়াত, বিএনপি ও জঙ্গি; যারা স্বাধীনতা চায়নি, জঙ্গি ও সন্ত্রাসের উত্থান ঘটাতে চেয়েছিল, তাদের হাতের ক্রীড়নক (পুতুল) হয়ে গিয়েছে। দুইজন সাংবাদিক নিহত হয়েছে, এক নারী সাংবাদিককে নাজেহাল করা হয়েছে। এরা (হামলাকারীরা) মানুষের শত্রু, জনগণের শত্রু, দেশের শত্রু।’

এ সময় নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় আগুন ও ভাঙচুরের কথা তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘এদের আক্রোশই ছিল আওয়ামী লীগের প্রতি। যে পুলিশ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল, সেই পুলিশের ওপর তাদের আক্রমণ। বিজিবির ওপরও তারা আক্রমণ করেছিল। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি একত্র হয়ে যখন পারছিল না, তখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীকে দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করার জন্য তাদের সহযোগিতা চেয়েছি। সেনাবাহিনী কাজ করছে, শিগগিরই আমরা এই অবস্থান থেকে পরিত্রাণ পাব।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলনের ফাঁকে, ছাত্রদের মিসগাইড করে যে ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, যে হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটিয়েছে, যারা মৃত্যুবরণ করেছে তারা অনেকেই সাধারণ মানুষ। আমাদের আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগের অনেকে শাহাদাতবরণ করেছেন। তিনজন পুলিশ, একজন আনসার সদস্য শাহাদাতবরণ করেছেন। একজন পুলিশ মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। এক পুলিশ সদস্যকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘নরসিংদীতে জেলে হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের বের করে নিয়ে গেছে, অস্ত্র লুট করেছে। অস্ত্র ও জঙ্গি নেওয়ার উদ্দেশ্য আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারেন। জঙ্গি উত্থান যারা ঘটাতে চেয়েছিল তারাও এই আন্দোলনে সক্রিয় হয়েছে। অস্ত্রগুলো তারা আমাদের পুলিশের বিপক্ষে ব্যবহার করছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে ডিবি হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তিন মন্ত্রীকে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তিনজন মন্ত্রী ছাত্রনেতাদের নিয়ে বসেছিলেন, তাদের আট দফা দাবির কথা শুনেছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, যৌক্তিক দাবিগুলো মেনে নেবেন, কিন্তু সেই সুযোগ তারা দেয়নি। আমরা তাদের সেফ কাস্টডিতে (নিরাপত্তা হেফাজত) নিয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি, পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’