বরেণ্য অভিনেতা ড. ইনামুল হক আর নেই। সোমবার  বিকাল ৪টার দিকে বেইলি রোডের নিজ বাসায় মারা যান তিনি। ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর।

গণমাধ্যমকে ইনামুল হকের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন অভিনেতা শহীদ আলমগীর। বলেন, ‘তিনি সুস্থই ছিলেন। দুপুরের খাবার শেষে হেলান দিয়ে বসেন। ওই অবস্থায়ই মারা যান। বিশেষ কোনও কারণ জানা যায়নি।’

শহীদ আরও জানান, তিনি বর্তমানে মরদেহের সঙ্গেই আছেন। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কোয়ান্টাম সেন্টারে তার শেষ গোসল করানো হচ্ছে। এরপর মরদেহ বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। তবে কোথায় দাফন হবে, কখন জানাজা হবে, এসব এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।

উল্লেখ্য, দেশের অভিনয় জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র ড. ইনামুল হক। ফেনীতে জন্মগ্রহণ করা এই ব্যক্তিত্ব পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৬৫ সালে প্রভাষক হিসেবে বুয়েটের রসায়ন বিভাগে যোগ দেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি সহকারী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে উন্নীত হন।

ড. ইনামুল হকের অভিনয় জীবন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের সময়। জনগণকে আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নাটকের পথ বেছে নেন তিনি। একাত্তরে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ট্রাকে ঘুরে ঘুরে পথনাটক করেছেন। পরবর্তীতে তিনি টিভি নাটক, সিনেমা এবং ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে অভিনয় করে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন।

দুর্দান্ত অভিনয়ের পাশাপাশি চমৎকার গল্পের নাটক লিখে গেছেন ড. এনামুল হক। টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক লিখেছিলেন তিনি।

তার লেখা আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’ ও ‘কে বা আপন কে বা পর’।

১৯৬৮ সালে তার প্রথম লেখা নাটক ‘অনেকদিনের একদিন’ বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রচারিত হয়। নাটকটির  প্রযোজনায় ছিলেন আরেক বর্ষীয়ান কিংবদন্তি আবদুল্লাহ আল মামুন।

২০১২ সালে ড. ইনামুল হক একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৭ সালে তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার।