আদালতের নির্দেশনা পেলেই এস আলমসহ ৯টি শিল্প গ্রুপে রিসিভার বা সম্পত্তি তদারক বসাবে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা। তিনি বলেন, হুন্ডির মাধ্যমে পাচারের টাকা ফেরত আনতে কাজ করছে তিনটি টাস্কফোর্স।

ব্যাংক ঋণ আদায়ে এস আলমসহ ৯টি শিল্প গ্রুপে সম্পত্তি তদারক বা রিসিভার বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের মূল কাজ হবে ঋণের বিপরীতে জামানত এবং তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি খুঁজে বের করা। বিক্রি করে ব্যাংকের দেনা পরিশোধ করা।

ব্যাংকিং খাতে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, যদি সব গ্রাহক একসঙ্গে টাকা তুলতে যান, তাহলে বিশ্বের কোনো ব্যাংকের পক্ষে তা দেওয়া সম্ভব নয়।

এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, একসঙ্গে অনেক গ্রাহক টাকা তুলতে যাওয়ায় কয়েকটি ব্যাংক তাদের টাকা দিতে পারছে না। জমাকৃত টাকা নিয়ে আতঙ্কিত হবেন না। সবাই টাকা ফেরত পাবেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন,  সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্যসহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

গত আগস্টে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বিতর্কিত এস আলম গ্রুপের অধীনে থাকা ব্যাংকগুলোসহ ১১টি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠিত হয়।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে তারল্যসহায়তা দিতো। কিন্তু তা স্থগিত করায় অনেকগুলো ব্যাংক এখন গ্রাহকদের টাকা দিতে হিমশিম খাচ্ছে।

ব্যাংক খাত সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্সের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে হুসনে আরা শিখা বলেন, ব্যাংকিং সংস্কার নিয়ে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। জনবলের দক্ষতা বাড়াতে আরেকটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। তৃতীয় টাস্কফোর্স পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে কাজ করছে। টাস্কফোর্সে বিভিন্ন দেশ থেকে আইনজীবী ও পরামর্শক নিয়োগের কাজ চলছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বাড়িয়েছে বলেই এখন মূল্যস্ফীতি কমেছে।

বর্তমান গভর্নরের মেয়াদে তিন দফায় নীতি সুদহার বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে নয় দশমিক ৯২ শতাংশে, যা আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।

হুসনে আরা শিখা বলেন, আগামী ছয় মাস এই পতনের ধারা অব্যাহত থাকলে তা ছয় শতাংশে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।