ইলিশ সংরক্ষণ মৌসুম শেষে বৃহস্পতিবার (১ মে) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে চাঁদপুরের পদ্মা ও মেঘনা নদীতে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এতে দুই মাস পর নদীতে ফিরেছেন হাজারো জেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান।
জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত জাটকা (২৫ সেন্টিমিটারের কম দৈর্ঘ্যের ইলিশ) সংরক্ষণের লক্ষ্যে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত প্রায় ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এ সময় পরিচালিত ১,০৬৪টি অভিযানে ১২৯ জন জেলেকে আটক করা হয়। এর মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৫ জনকে কারাদণ্ড ও ১২৪ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।
সদরের মৎস্যজীবী নেতা তছলিম ব্যাপারী বলেন, ইলিশ পাওয়ার আশায় জেলেরা নদীতে নামতে শুরু করেছে। ইলিশ ধরা প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। তবে সরকার বিকল্প কর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিচ্ছে এবং বিভিন্ন উপকরণ সহায়তা দিচ্ছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী বলেন, দুই মাস পর আজ রাত ১২টা ১ মিনিটে চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ ধরা শুরু করেছে। অভিযানকালে জেলেদের খাদ্য সহায়তা হিসেবে জনপ্রতি ৪০ কেজি করে ৪ কিস্তিতে মোট ১৬০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, দুই মাসের কঠোর অভিযানের ফলে এবার নদীতে ইলিশের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, দুই মাসের অভিযানে চাঁদপুর অংশে একটি থানা ও পাঁচটি পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয়। এতে ৯ কোটি ৯০ লাখ ৩৪ হাজার মিটার কারেন্টজাল ও ১৮ টন জাটকা জব্দ হয়। আটক করা হয় ২৬৮ জন জেলে এবং ১২৩টি নৌযান।
উল্লেখ্য, মা ইলিশ রক্ষায় ও ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটার এলাকায় ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে সরকার। এসময় সকল প্রকার মাছ শিকার, ক্রয়-বিক্রয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে বেকার হয়ে পড়েন ভোলার ১ লাখ ৭০ হাজার ২৪৩ জন নিবন্ধিতসহ প্রায় ৩ লাখ জেলে। তবে নিষেধাজ্ঞার সময়ে খাদ্য সহায়তা হিসেবে ৮৯ হাজার ৬০০ জেলের জন্য ১৬০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।