রাজধানীর কাওরান বাজারে প্রথম আলোর অফিসে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলাম।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।

নজরুল ইসলাম বলেন, দুটি দৈনিক পত্রিকায় হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে থানা পুলিশ ১৩ জন, সিটিসি ৩ ও ডিবি বিভাগ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

তিনি আরও বলেন, অন্য আসামিদের ধরতে অভিযান চলমান আছে। চারটি আইনের ধারায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

হামলার ৪ দিন পরে সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপি ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনের বিভাগের প্রধান জানান, হামলায় অভিযুক্ত ও লুটের ঘটনায় অংশ নেয়া ৩১ জনকে সিসিটিভি ফুটেজ ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে শনাক্ত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় সন্ত্রাস দমন ও ডিজিটাল নিরাপত্তাসহ ৪টি ধারায় মামলা করেছে প্রথম আলো।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, প্রাণহানি এড়ানোকেই বড় অর্জন হিসেবে দেখছেন তারা।

এদিকে, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবরে ১৮ ডিসেম্বর উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। উত্তেজিত জনতার একটি অংশ প্রথম আলো, ডেইলি স্টার কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় যে, জাতীয় দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে সম্প্রতি হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে সাতজনের পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তারা হলেন- মো. কাশেম ফারুক, মো. সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো. নাইম, ফয়সাল আহমেদ প্রান্ত, মো. সোহেল রানা এবং মো. শফিকুল ইসলাম। এছাড়া পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও গোয়েন্দা পুলিশ আরও দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রোববার (২১ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জানিয়েছেন যে সাম্প্রতিক এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এরইমধ্যে ৩১ জনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের কাছে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাকারীদের মধ্যে তিনজনকে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে।