জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আগামী ১৬ নভেম্বরের মধ্যে মেনে না নিলে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছে জামায়াতে ইসলামীসহ আন্দোলনরত আট দল।
বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান।
এসময় তিনি কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
১৩ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তির নাশকতা ও অপতৎপরতা প্রতিরোধে আট দলের নেতৃবৃন্দ সর্বস্তরের জনশক্তিসহ দেশব্যাপী রাজপথে অবস্থান করবেন। একই সঙ্গে ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দেশপ্রেমিক শক্তিকে রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
১৪ নভেম্বর, শুক্রবার মুজিবুর রহমান জানান, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি ও জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে গণভোট আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
১৬ নভেম্বর, রবিবার ১৬ নভেম্বর সকাল ১১টায় আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে সংবাদ সম্মেলন হবে।
এর আগে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে না নিলে সেই সংবাদ সম্মেলন থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত আট দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার ভেলানগর এলাকা থেকে ফারুক, রবিন, শামীম ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের তল্লাশি করে উদ্ধার করা হয় নগদ ১ লাখ ৫৩ হাজার ৬৪০ টাকা, যা হত্যাকাণ্ডের পারিশ্রমিক হিসেবে মূল পরিকল্পনাকারী রনি দিয়েছিলেন।
ডিবি জানায়, ফারুক ও রবিন হত্যার পর রনির নির্দেশে ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি রেন্ট-এ-কারচালক রুবেলের কাছে দেন। পরে রুবেল অস্ত্রগুলো পেয়ে রনিকে জানানোর পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় ইউসুফ নামের এক দরজির বাসায় নিয়ে লুকিয়ে রাখেন। ইউসুফের ঘর তল্লাশি করে দুটি বিদেশি পিস্তল, ছয়টি গুলি ও দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করা হয়েছে।
ইউসুফ ও রুবেল স্বীকার করেছেন, রুবেল হত্যার দিন অস্ত্রভর্তি ব্যাগ ইউসুফের কাছে রেখে গিয়েছিলেন।
ডিবির তদন্তে উঠে এসেছে, মামুন হত্যার পরিকল্পনা দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের ঘনিষ্ঠ রনি ও তাঁর সহযোগী ফারুক একাধিকবার মামুনকে হত্যার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে ১০ নভেম্বর যেদিন মামুনের মামলার হাজিরার দিন ধার্য ছিল, সেদিনকে বেছে নেন রনি। আগের দিন সন্ধ্যায় রনি তাঁর বাসায় রবিনকে ডেকে পরিকল্পনার চূড়ান্ত নির্দেশনা দেয়। পরদিন সকালে রনি রবিনকে ফোনে আদালত এলাকায় যেতে বলেন। সকাল ১০টার দিকে রবিন তাঁর বন্ধু শামীমের চালানো মোটরসাইকেলে করে সেখানে যান। একইভাবে রনির নির্দেশে ফারুক, সুমন ও কামালও জজকোর্ট এলাকায় অবস্থান নেন। প্রথমে সুমন ও ফারুককে গুলি চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হলেও সুমনের সঙ্গে রনির বাগ্বিতণ্ডা হলে রনি তাঁর কাছ থেকে দুটি পিস্তল নিয়ে একটি ফারুক ও আরেকটি রবিনকে দেন।
রনির নির্দেশে হত্যাকারীরা ঢাকা ছেড়ে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেন। সেখানে পৌঁছে ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। তবে সীমান্ত অতিক্রমে ব্যর্থ হয়ে সাতক্ষীরার পথে ঢাকায় ফেরার সময় গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে ধরা পড়েন।
ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ড আন্ডারওয়ার্ল্ডের পুরোনো দ্বন্দ্বেরই ধারাবাহিকতা। মামুন ও ইমন দুজনই শীর্ষ সন্ত্রাসী, যারা ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের দখল নিয়ে লড়াই করছিল। আমরা মূল পরিকল্পনাকারী রনি ও তার সহযোগীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’












