ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর মহাকাশের এমন একটি বিশেষ স্থান যেখান থেকে কোনো কিছু, এমনকি আলো পর্যন্ত বের হয়ে আসতে পারে না। এটা তৈরি হয় খুবই বেশি পরিমাণ ঘনত্ব বিশিষ্ট ভর থেকে। কোনো অল্প স্থানে খুব বেশি পরিমাণ ভর একত্র হলে সেটি আর স্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারে না। এই কৃষ্ণগহ্বর নিয়ে গবেষণা নতুন কিছু নয়। আইনস্টাইন থেকে শুরু করে বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোল নিয়ে দিনের পর দিন গবেষণা করেছেন। এখনো চলছে নানা গবেষণা। কয়েক বছর আগেই বিজ্ঞানীরা ব্ল্যাক হোলের ছবি প্রকাশ করে এর অস্তিত্বের প্রমাণ দিয়েছিলেন। এবার এর হার্টবিট বা হৃদস্পন্দনের ছবি তুললেন বিজ্ঞানীরা। আর সেই ছবিই প্লাজমা জেটগুলোর একটি বড় রহস্যের সমাধান করেছে।

ব্ল্যাক হোলের এই হার্টবিট বা তার থেকে নির্গত আলোর ওঠানামা প্রায় ১৫ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছিল। আর সেই পর্যবেক্ষণ থেকে উঠে এসেছে, ব্ল্যাক হোলের খাওয়ানোর ধরন সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য। ব্ল্যাক হোলের ইভেন্ট হরাইজনের বাইরে রয়েছে একটি কাঠামো, যাকে বলা হয় করোনা ফর্মস। সেখানেই প্লাজমার শক্তিশালী জেটগুলো খুঁটি থেকে উৎক্ষেপণ শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটি করোনা থেকে উপাদানকে শূন্যে আলোর কাছাকাছি গতিতে ইন্টারস্টেলার স্পেস বা আন্তঃনাক্ষত্রিক স্থানে ঠেলে দেয়। এ প্রক্রিয়াটিকেই বলা হচ্ছে কৃষ্ণগহ্বরের হৃদস্পন্দন বা ব্ল্যাক হোলের হার্টবিট। ব্ল্যাক হোল কীভাবে কাজ করে, সেই সংক্রান্ত সব দ্বন্দ্বের সমাধান করে দিচ্ছে এই প্রক্রিয়া।

যদিও আগে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন, করোনা ও জেট একই জিনিস। কিন্তু পরে দেখা গেল, তারা একের পর এক উত্থিত হয় এবং জেটটি করোনা থেকে অনুসরণ করে বলে জানিয়েছে নিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট মারিয়ানো মেন্ডেজ। পর্যবেক্ষণের জন্য যে ব্ল্যাক হোলটিকে কাজে লাগানো হয়েছিল, সেটির নাম জিআরএস ১৯১৫ + ১০৫। সূর্য থেকে প্রায় ৩৬ হাজার আলোকবর্ষ দূরে এর অবস্থান।