বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম আবারও শক্তিশালী বৃদ্ধি দেখিয়েছে। বুধবার স্বর্ণের দাম ১ শতাংশের বেশি বেড়ে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহকে স্পষ্ট করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী এবং বিলম্বিত মার্কিন চাকরি প্রতিবেদনের দিকে বাজার এখন গভীরভাবে নজর রাখছে, কারণ এগুলো ভবিষ্যৎ সুদের হারের ইঙ্গিত দেবে।
বুধবার ১০৪৭ জিএমটি পর্যন্ত স্পট গোল্ডের দাম ১.১% বেড়ে প্রতি আউন্সে ৪,১১২.৫০ ডলার–এ দাঁড়ায়। আর ডিসেম্বর ডেলিভারির মার্কিন ফিউচার স্বর্ণের দামও ১.১% বৃদ্ধি পেয়ে ৪,১১২.৯০ ডলার হয়।
এফএক্সটিএম–এর সিনিয়র রিসার্চ অ্যানালিস্ট লুকমান ওটুনুগা বলেন, আগের সেশনে স্বর্ণের দাম মনস্তাত্ত্বিক সীমা ৪,০০০ ডলারের কাছ থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর পর বাজারে সতর্কতার মধ্যেও আজ স্বর্ণ কিছুটা ‘‘ঝলমল’’ করছে।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা অপেক্ষা করছেন ফেডের অক্টোবর বৈঠকের কার্যবিবরণী ও বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হতে যাওয়া সেপ্টেম্বরের চাকরি প্রতিবেদনের জন্য। রয়টার্স জরিপ অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫০ হাজার নতুন চাকরি সৃষ্টির প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
ওটুনুগা আরও বলেন, যদি নতুন অর্থনৈতিক তথ্য সুদের হার কমানোর পক্ষে যায়, তাহলে স্বর্ণের দাম ৪,১৩০ থেকে ৪,২০০ ডলার পর্যন্ত উঠতে পারে। তবে ফেড কর্মকর্তাদের কড়া মন্তব্য বা প্রত্যাশার চেয়ে শক্তিশালী অর্থনৈতিক তথ্য এলে দাম আবার ৪,০০০ ডলারের নিচের দিকে নামতে পারে।
অন্যদিকে, নতুন তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবরের মধ্যভাগে যুক্তরাষ্ট্রে বেকারভাতা গ্রহণকারীর সংখ্যা দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছেছে।
ফেডের বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে নীতিনির্ধারকদের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ও শ্রমবাজার নিয়ে মতপার্থক্য কতটা গভীর—সে বিষয়ে ধারণা পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একই সঙ্গে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা নিয়ে ট্রেডারদের প্রত্যাশাও কমে ৪৬%–এ নেমেছে, যা এক সপ্তাহ আগেও ৬৩% ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদহার কমার সম্ভাবনা থাকলে স্বর্ণের জন্য তা ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে। বিপরীতে, শ্রমবাজার শক্তিশালী থাকলে স্বর্ণের দাম চাপের মুখে পড়ে মনস্তাত্ত্বিক সীমা ৪,০০০ ডলারের নিচেও নেমে যেতে পারে।
অন্য মূল্যবান ধাতুর বাজারেও উত্থান দেখা গেছে। স্পট সিলভারের দাম ৩.১% বেড়ে ৫২.২৭ ডলার, প্লাটিনাম ২.১% বেড়ে ১,৫৬৬.৩২ ডলার এবং প্যালাডিয়াম ২.৪% বৃদ্ধি পেয়ে ১,৪৩৩.৪৬ ডলার প্রতি আউন্স হয়েছে।












