লিবিয়ার সেনাপ্রধান মুহাম্মদ আলী আহমেদ আল-হাদ্দাদ তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারার কাছে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছেন। তার সঙ্গে আরও চার কর্মকর্তা প্রাণ হারিয়েছেন। লিবিয়ার আন্তর্জাতিক মহল স্বীকৃত সরকারের প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদ দবেইবা এক বিবৃতিতে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে এটিকে ‘মর্মান্তিক দুর্ঘটনা’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। আঙ্কারা থেকে ফেরার পথে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
দবেইবা বিবৃতিতে বলেন, ‘এই মহাবিপর্যয় দেশ, সেনাবাহিনী এবং জনগণের জন্য এক বিশাল ক্ষতি। কারণ আমরা এমন সব মানুষদের হারিয়েছি যারা আন্তরিকতা ও নিবেদিতভাবে দেশের সেবা করেছেন। শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ ও জাতীয় অঙ্গীকারের ব্যাপারে তারা উদাহরণ ছিলেন।’
সেনাপ্রধান ছাড়া নিহত অন্যান্য সেনা কর্মকর্তারা হলেন—স্থলবাহিনীর প্রধান আল-ফিতুরি ঘারিবিল, সামরিক বাহিনীর উৎপাদন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মাহমুদ আল-কাতাওয়ী, আল-হাদ্দাদের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আল-আসাওই দিয়াব এবং সামরিক চিত্রগ্রাহক মুহাম্মদ ওমর আহমেদ মাহজুব।
তুর্কি প্রেসিডেন্টের কমিউনিকেশনস ডিরেক্টরেটের প্রধান বুরহানেত্তিন দূরান জানান, দুর্ঘটনায় তিনজন ক্রু সদস্যও নিহত হয়েছেন। বিমানটি বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে জরুরি অবতরণের জন্য অনুরোধ করেছিল।
দূরান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেন, ‘লিবিয়ার সেনাপ্রধান মুহাম্মদ আল-হাদ্দাদ, তার চারজন সফরসঙ্গী এবং তিনজন ক্রু-কে বহনকারী একটি প্রাইভেট জেট বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের কাছে জরুরি অবতরণের জন্য অনুরোধ করেছিল।
তুরস্কের আইনমন্ত্রী (জাস্টিস) ইলমাজ তুনচ জানান, আঙ্কারার প্রধান প্রসিকিউটর অফিস এই ঘটনায় একটি তদন্ত শুরু করেছে।
তুর্কি সমকক্ষ ও অন্যান্য সামরিক কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করতে আঙ্কারায় এই সফরে এসেছিলেন আল-হাদ্দাদ ও তার সঙ্গীরা। তারা যে প্রাইভেট জেটে করে তুরস্ক সফরে আসেন, সেটি লিবিয়া সরকারের ভাড়া করা বিমান।
আল-হাদ্দাদ দীর্ঘদিন ধরে সেনাবাহিনীতে চাকরি করছেন। পশ্চিম লিবিয়ায় তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়। লিবিয়ার ক্ষমতাচ্যুত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি বিরোধী বিদ্রোহে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
মঙ্গলবারের দুর্ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল, যার আগের দিন লিবিয়ায় নিজেদের সেনাদের অবস্থানের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তুরস্কের পার্লামেন্ট।












